শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
বিদেশে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস গুলোকে পর্যটন প্রচারণায় যুক্ত করছি
জাবেদ আহমেদ

বিদেশে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস গুলোকে পর্যটন প্রচারণায় যুক্ত করছি

প্রতিষিদ্ধ প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : March 15, 2022 | পর্যটন

জাবেদ আহমেদ বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) । তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) ক্যাডারের সদস্য। তিনি ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ তারিখে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ক্যাডারে যোগদান করেন। তার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে তিনি বিভিন্ন যোগ্যতায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যান মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন।

জাবেদ আহমেদ বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) । তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) ক্যাডারের সদস্য। তিনি ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ তারিখে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ক্যাডারে যোগদান করেন। তার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে তিনি বিভিন্ন যোগ্যতায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যান মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের আগে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক সেমিনার, সম্মেলন এবং রাষ্ট্রীয় বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত তিনি বিশ্বের অনেক দেশ পরিদর্শন করেন। তিনি রাজশাহীর বাসিন্দা। সম্পতি পর্যটন খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন প্রতিষিদ্ধের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন প্রতিষিদ্ধের বিশেষ প্রতিবেদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার। 

প্রতিষিদ্ধ:  বিদেশী পর্যটকদের বর্তমানে বিটিবি কেমন সহায়তা দিচ্ছে?

জাবেদ আহমেদ: কোভিড ১৯ পৃথিবীর পর্যটন খাতকে তছনছ করে দিয়েছে। তবে এখন আগের মত ভ্রমণ নেই। তবে আঞ্চলিক কিছু ভ্রমণকে আমরা চালু রাখার চেষ্টা করছি। যেমন নেপাল, ভারতসহ আঞ্চলিক সম্পর্কগুলোকে আমরা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। অন্যান্য শিল্প সাধারণত বিশেষ কিছু ভৌগোলিক এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু পর্যটন খাত গোটা বিশ্বেই কম-বেশি ছড়িয়ে রয়েছে। এ-সংক্রান্ত ১৮৫টি দেশের তথ্য সংগঠিত আকারে পাওয়া যায়। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পৃথিবীর প্রায় সব দেশই পর্যটন খাতে বিশেষভাবে মনোযোগী রয়েছে। প্রাচীনকালে ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখার প্রথা চালু হলেও আধুনিক বাণিজ্যের ছোঁয়ায় এখন রীতিমতো ‘শিল্প’-এর পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। করোনার পর আমরা আশপাশের দেশ গুলো থেকে পর্যটক আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 

প্রতিষিদ্ধ: বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোকে বিদেশীদের কাছে উপস্থাপন করতে কেমন কার্যক্রম চালু আছে?

জাবেদ আহমেদ: আমাদের পর্যটন গুলোকে বিদেশীদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। আমরা প্রায় প্রত্যেকটি মেলায় অংশগ্রহণ করছি। সেসব মেলায় আমরা বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আমরা উপস্থাপন করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে দুবাইয়ে একটি মেলা হয়েছে সেখানে আমরা আমাদের দেশের পর্যটন ও সৌন্দর্য গুলোকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমরা বিভিন্ন দেশে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস গুলোকে প্রচারণার মাধ্যমে তাদেরও এ প্রচার কাজে নিয়োজিত করারা কাজ করে যাচ্ছি। 

প্রতিষিদ্ধ: দেশে বিদেশী বিয়োগ বাড়লে পর্যটন সম্ভাবনা আরো বাড়বে কিনা?

জাবেদ আহমেদ: বাংলাদেশে প্রতি বছর ৯০ থেকে ৯৫ লাখ পর্যটক দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করে থাকেন। বাংলাদেশ হাজার বছরের পুরাকীর্তিসমৃদ্ধ। বগুড়ার মহাস্থান গড়, কুমিল্লার বৌদ্ধ বিহার, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, ছোট কাটারা, বড় কাটারা, মোগল পাঠান যুগের ঐতিহাসিক মসজিদ, ঈদগাহ, সোনার গাঁও ইত্যাদির ঐতিহ্য রয়েছে। রয়েছে অনন্যসাধারণ সুন্দরবন। আছে কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, পাহাড়ঘেরা পার্বত্য এলাকা চট্টগ্রাম, সিলেটের চা-বাগানগুলোর অপার সৌন্দর্য, রামু, গজনি, দুর্গাপুর, বিজয়পুর, মাধবকুণ্ড। এর কোনোটিতে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। তবে এখনো অনেক স্থানে থাকা-খাওয়ার সুবিধা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে আমাদের চেয়ে অনেক ছোট দেশ মালদ্বীপের পর্যটন খাতে আয় বিপুল। প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে কয়েক মাইল পরিধির টোগো দ্বীপ পর্যটন খাতে প্রতি বছর বাংলাদেশী টাকায় আয় করছে দুই হাজার কোটি টাকা আর বাংলাদেশে এ খাতে যে আয় হয়ে থাকে তা অতি নগণ্য।

প্রতিষিদ্ধ:  পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সে এলাকা পর্যটকদের জন্য কেমন নিরাপদ মনে করছেন?

জাবেদ আহমেদ: এজন্য বিশেষ করে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে যতটুকু ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটি আমরা করছি। সেনাবাহিনী সেখানে কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে তাদের ভ্রমণ সম্পন্ন করতে পারে সে লক্ষ্যে আমরাও তাদের যতেষ্ট গাইড করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক ভাবে সচেতন করে যাচ্ছি। টুরিস্ট পুলিশও পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে। 

প্রতিষিদ্ধ:  ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যটন প্রচার ও প্রসারের জন্য বিটিবি কেমন সহায়তা করে থাকে?

জাবেদ আহমেদ: পর্যটনের প্রচার প্রসারে মিডিয়ার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি জানেন যে আমরা প্রতিবছর একটি মিডিয়া ফেলোশীপ দিয়ে থাকি। যাতে সাংবাদিকরা এতে উৎসাহ পায়। পর্যটন সাংবাদিকতাকে আমরা দারুণভাবে উৎসাহিত করছি। বিদেশী সাংবাদিকদের এনে আমরা বাংলাদেশের সৌন্দর্য দেখানোর চেষ্টা করছি। বিশজন সাংবাদিককে আমরা মোটা অংকের ফেলোশিপ প্রতি বছরই দিয়ে যাচ্ছি। 

প্রতিষিদ্ধ: কৃত্রিম লেক ও প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনে বিটিবির কেমন কার্যক্রম বর্তমানে চালু আছে?

জাবেদ আহমেদ: বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় আমাদের দেশে নদী সমুদ্রের গুরুত্ব অনেক। আমাদের বিল, হাওড় বাওড়, যেমন টাঙ্গুয়ার হাওর এগুলোর গুরুত্ব পর্যটন খাতে অনেক। আমাদের যে পেয়ারা বাগান এটিও কিন্তু খালের মধ্যে। এটি পর্যটন খাতের ভালো ভূমিকা রাখছে। দখলমুক্ত করার ব্যপারে আমাদের কিছু করার নেই। এগুলো দেখার আলাদা কতৃপক্ষ আছে। তবে পর্যটন খাতে যাতে দেশি - বিদেশী বিনিয়োগ আনার ব্যপারে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। 

প্রতিষিদ্ধ:  পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ব্যবসায়িক ও স্থানীয় নৈরাজ্য রোধে বিটিবির কেমন পদক্ষেপ নিয়েছে?

জাবেদ আহমেদ: বণিজ্যিক নৈরাজ্যের ব্যপারে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করছি কিভাবে  এগুলোকে রোধ করা যায়। দেখা যায় একটি ঘাট সেটি যখন কোন মাস্তান চক্রের দখলে চলে যায় তখন স্থানীয় প্রশাসন সেদিকে নজরদারী না করলে এটিকে রোধ করা সম্ভব হয় না। পর্যটন স্পট গুলোতে মানুষ যায় আনন্দের জন্য । কিন্তু সেখানে গিয়ে যদি হুমকির মুখে পড়তে হয় তাহলে মানুষ সেখানে যাবে কেন, তবে আমাদের টুরিস্ট পুলিশ দেশের সব পর্যটন স্পটগুলোতে কাজ করছে। আর যারা পর্যটন সেবা দেয়ার কাজ করে তারাও নিরাপত্তা সম্পর্কিত কাজগুলো করে থাকে। তারপরও নিরাপত্তার বিষয়টি বাংলাদেশের পর্যটন খাতে এখনও বড় কোন হুমকি নয়। 

প্রতিষিদ্ধ: আপনাকে ধন্যবাদ।